হামাস কি পারবে ফিলিস্থিন মুক্ত করতে?


একটা জটিল বিষয় আমার মাথায় ঘুরছে অনেকদিন যাবৎ... এখন বিষয়টা আপনাদের সাথেও শেয়ার করছি।


হামাস গাজার নিয়ত্রন করে এখানে ইসরাইলি সৈন্যদের ফিলিস্থিনের পশ্চিম তীরের মত এক্সেস নাই। পশ্চিম তীরে যেভাবে প্রতিটি রাস্তায় ইসরাইলি বাহীনির চেকপোস্ট আছে গাজায় তেমন কোন নিয়ত্রন নেই ইসরাইলের,,সেখানে ফিলিস্থিনিরা স্বাধিনভাবেই বসবাস করতে পারে যদিও ইসরাইলি অবরোধের কারনে গাজা উপত্যকাকে ওপেন এয়ার প্রিজন বলা হয়ে থাকে।আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতাসমূহও ইসরাইলি কতৃপক্ষের অনুমতিতে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারে।

বর্তমানে হামাস যেভাবে ইসরাইলি স্বার্থে আঘাত করে চলেছে, তারপরেও ইসরাইল কেন গাজা দখলের উদ্দেশ্যে আক্রমন করছে না তাই আমার কাছে চিন্তার মূল কারন ছিল।
স্পষ্টত গাজা উপত্যকা দখল করা ইসরাইলি বাহীনির জন্য তেমন কঠিন কোন কাজ নয়। কিন্তু তারপরেও পশ্চিম তীরের মত কেন দখল করে না?

ইসরাইল রাস্ট্রটি ইহুদি ধর্মীয় চেতনার উপর প্রতিষ্ঠিত,, যেখানে ইউরুপীয়ান,রাশিয়ান, আফ্রিকা সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ইহুদিরা বসবাস করে।

বনে হরিন,মহিষ যেমন মাংসাশী প্রানীর ভয়ে, ঠিকে থাকার জন্য দলগতভাবে একতা রক্ষা করে চলাফেরা করে ঠিক ইসরাইলও একইভাবে ইহুদিদের জীবনের ভয়ে ইহুদিদের একতাই ঠিকে আছে, ইসরাইলি ইহুদিদের বিশ্বাস হলো যদি ইসরাইল ধংস হয়ে যায় তাহলে ইহুদি জাতি ধংস হয়ে যাবে,, তাদের সবাইকে হত্যা করা হবে। ইহুদিদের অন্য কোথাও যাওয়ার কোন স্থান নেই। এই বিশ্বাসটা ইহুদিদের মধ্যে তৈরি হওয়ার মূল কারন ছিল ইহুদিদের উপর হওয়া গণহত্যা সমূহ, যেখানে শুধু ইহুদি ধর্ম পরিচয়ের কারনেই ইহুদিদের হত্যা করা হয়েছে।

যদি ইসরাইলের উপর এমন কোন হুমকি না আসে বা আসা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ইসরাইলিদের মন মানষিকতায় আস্তে আস্তে অনেক পরিবর্তন স্বাধিত হবে এবং নিজেদের মধ্যে জাতি বিভেদ স্পস্ট হতে থাকবে যারফলে তাদের মধ্যে জাতিয়তাবাদের উত্থান ঘটবে। যার একমাত্র পরিনতি ইসরাইল রাস্ট্রের ধংস।

সুতারাং ইজরাইলিদের মনে ভয় ঠিকিয়ে রাখতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাস, হিজবুল্লাহ এবং আরবরাস্ট্রগুলার হুমকি বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অন্যরাস্ট্রের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সংঘর্ষে লিপ্ত থাকলে ইসরাইলকে যত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ও সামরিক চাপ মোকাবেলা করতে হবে তার তুলনায় হামাসের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সংঘর্ষে লিপ্ত থাকা ইসরাইলের জন্য বেশি সুবিধাজনক। ইসরাইলের এমন একটা শত্রু চাই যেটি বেশি শক্তিশালীও নয় আবার একেবারে অস্তিত্বহীনও নয়।

আবার এই কারনে আপনি হামাসকে ইসরাইলের এজেন্ডও বলতে পারবেন না,, কারন মনে রাখবেন প্রতিটা কিছুরই দুইটা দিক থাকে। ঠিক একইভাবে বর্তমানে ভারতের ইসলাম বিদ্বেষী উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি যেভাবে বাংলাদেশের উগর্বাদী মুসলিমদের গ্রহণযোগ্যতা জনমনে বাড়িয়ে দিচ্ছে,,সেকারনে আপনি বিজেপি ও আরএসএস কেও কিন্তু উগ্রবাদী মুসলিম দলগুলার এজেন্টও বলতে পারবেন না

আরো একটি বিষয় হলো ইসরাইল কোনভাবেই ফিলিস্থিনি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা বা কোন অঞ্চলেই ফিলিস্থিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা চাই না। ১৯৯৩ সালে ফাতাহ সরকারের সাথে অসলো চুক্তির পর ইসরাইল বরাবরই বিশ্বের কাছে চুক্তির শর্তসমূহ বাস্তবায়ন করতে চাপে পড়তে হতো, যদিও সে চাপ মোকাবেলা করা ইসরাইলের জন্য তেমন কঠিন কিছু ছিল না কারন যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা ইসরাইলের সমর্থক দিয়ে আসছিল। তারপরেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য হামাসের উত্থান ইসরাইলকে একটি সুযোগ এনে দেয় এবং যার ফলে ফিলিস্থিনিদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে। এমনকি হামাসের উত্থানে ইসরাইল অজ্ঞাত সোর্স থেকে হামাসকে সাহায্য সহায়তাও করেছে, ইন্টার্নেটে এমন অনেক সুর্সই পাওয়া যায়।

হামাস মূলত মুসলিম ব্রাদারহুড পন্থি দল, যার কারনে ইসরাইল চাইলেই তাদের ইসলামিক টেরারিস্ট অর্গানাইজেশন বলেও চালিয়ে দিতে পারে, (বেশিরভাগ আরব দেশেই মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ)

এসব বিবেচনা করে ও হামাসের সাথে খণ্ডযুদ্ধের চাপে ২০০৫ সালে গাঁজা উপত্যকা থেকে সৈন্য পত্যাহার করে নিয়েছিল ইসরাইল। 

Post a Comment

Previous Post Next Post