গতবছর ভারতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় এক পাকিস্তানি পেইজ পোস্টে, জিন্নাহর দ্বারা দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টির গুরুত্ব তুলে ধরার চেস্টা করল এবং জিন্নাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।
বিষয়টা চোখে পরার পরই আমার নিকট তা একটু বিব্রতকর মনে হলো, অতপর আমি তার বিতর্কে জড়ালাম, তর্কটা কি রকম ছিল তা আর উল্লেখ করছি না, তবে নিন্মে তর্কের মূল পয়েন্টটা তুলে ধরছি।
দ্বিজাতিতত্ত্ব থিওরিটা ছিল __ ভারতীয় মুসলিমদের জন্য পাকিস্তান এবং হিন্দুদের জন্য ভারত নামের দুইটি রাষ্ট্রের গঠন করা। এতটুকু তো আমরা সকলেই জানি।
এখন আসি একটু অন্য প্রসঙ্গে, ১/-ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল সৃষ্টির লক্ষ্য ছিল সারাবিশ্ব ইহুদিদের জন্য।..তারা বিশ্বের সকল ইহুদিকে নাগরিকত্ব ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে বদ্ধপরিকর। সে জায়োনিস্ট হোক বা এন্টি-জায়োনিস্ট অর্থোডক্স, সে আফ্রিকান ইহুদি হোক বা রাশিয়ান ইহুদি, ইউরুপিয়ান, আফ্রিকান নির্বিশেষে সকল ইহুদিকে ইসরাইল নাগরিকত্ব দিতে বধ্যপরিকর।
২/-দক্ষিন কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়া উভয়ই সম্পূর্ণ কোরিয়া উপদ্বীপকে নিজেদের দাবী করে এবং দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদেরও নিজ জনগন হিসেবে বিবেচনা।
যেসব ব্যক্তি উত্তর কোরিয়া থেকে পক্ষত্যাগ বা পালিয়ে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত পার হতে সক্ষম হলেই, দক্ষিণ কোরিয়া সে ব্যক্তিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়ে আসা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকত্ব দিতে বধ্যপরিকর।
এখন আসি মূল প্রসঙ্গে, পাকিস্তান প্রতিস্টা হয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্বে ভিত্তিতে, অর্থ্যাৎ ভারতের সকল মুসলিমদের জন্যই এই রাস্ট্রের সৃষ্টি। কিন্তু এই রাষ্ট্রটি ভারতের সকল মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে বধ্যপরিকর নয়। তার মানে দাড়াই দ্বিজাতিতত্ত্বের পাকিস্তান ভারতের সকল মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যার্থ, অর্থ্যাৎ ভারতের সকল মুসলিম এই দ্বিজাতিতত্ত্বের উপকারিতা পাচ্ছে না। ভারতের মুসলিমদের কথা দূরে থাক, দেশভাগের সময় পাকিস্তানে যাওয়া অনেক মুহাজিরদেরকেও এখনো নাগরিকত্ব দেওয়া হয় নি।
যেহেতু দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েও দ্বিজাতিতত্ত্বের মূল লক্ষ্য পূরণ করতে পাকিস্তান ব্যার্থ,, সে হিসেবে আমার দৃষ্টিতে পাকিস্তান একটি ব্যার্থ রাষ্ট্র এবং দ্বিজাতিতত্ত্ব একটি লেইম/পঙ্গু তত্ত্ব।
(আপনার ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে, তবে এটা আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি)